মুম্বাই হামলার ১২ বছর পরও পাকিস্তানের ধরাছোঁয়ার বাহিরে ১৯ জঙ্গি

মুম্বাই হামলার ১২ বছর পরও পাকিস্তানের ধরাছোঁয়ার বাহিরে ১৯ জঙ্গি

মুম্বাইয়ে হওয়া জঙ্গি হামলার ১২ বছর পরও ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে এই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লস্কর-ই-তৈয়বরে (এলইটি) ১৯ জঙ্গি। পাকিস্তানে বসবাস করা এবং হামলার পর পাকিস্তানে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া এই জঙ্গিদের দাগী আসামি বা ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে ঘোষণা করলেও দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের আটক করতে খুব একটা তৎপর নয়। উল্টো আটক জঙ্গিদের বিভিন্ন মেয়াদে ‘লঘু’ শাস্তি দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের এই ‘হাস্যকর’ সাজা দেয়ার মূল কারণ জঙ্গি অর্থায়নে সম্পৃক্তদের খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)। সম্প্রতি সংস্থাটি পাকিস্তানের উপর ‘গ্রে’ টাইপের অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে যা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বলবত থাকবে। জঙ্গি অর্থায়নে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কারণে এই অবরোধ আরোপ করা হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই শাস্তির পরিমাণ যেন আরো না বাড়ে সে কারণে ১৯ জঙ্গিকে দাগি আসামি হিসেবে ঘোষণা ও আটক জঙ্গিদের শাস্তির কার্যক্রম শুরু করেছে পাকিস্তান।

অবশ্য পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) দেশটির সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছে, ১২০০ জনের বেশি জঙ্গির তালিকা করা হয়েছে এবং তাদের আটকের জন্য চেষ্টা করা চলছে। এই এফআইএ ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর থেকে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের খুঁজতে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো তারা ১৯ ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিকে খুঁজে পায়নি।

পাকিস্তানের করাচী থেকে সমুদ্র পথে নৌকা নিয়ে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয় মুম্বাইয়ে। আমেরিকা, কানাডা, জর্ডান, মালয়েশিয়া, মরিশাস ও ইসরাইলের নাগরিকদের হত্যা করা হয় সেই সন্ত্রাসী হামলায়। জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বের সেই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নারীসহ ১৬৬ জন। বিকলাঙ্গ হয়েছেন ৪৬ নারী ও ১৩ শিশুসহ ১৭৯ জন। মোট আহত হন ৩০০ জনেরও বেশি। এই হামলায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ের সময় মারা যায় ৯ জঙ্গি। হামলার স্থান থেকে আটক হওয়া আরেক জঙ্গি আজমল কাসাবকে পরবর্তীতে ভারতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় এবং তা কার্যকরও করা হয়।

কিন্তু বিগত ১২ বছরে পাকিস্তান তার দেশে আটক জঙ্গিদেরও শাস্তি দিতে পারেনি। সম্প্রতি সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিরা এখনো পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টে জামিন আবেদন করেনি। একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এই জঙ্গিরা পাকিস্তানের এফএটিএফ ক্লিয়ারেন্স পাবার অপেক্ষায় আছে। এরপরই তারা জামিন আবেদন করে সুপ্রিমকোর্ট থেকে মুক্তি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *